কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বিধ্বংসী ভূমিকায় আফ্রিদি। ছবি: প্রিয়.কম

সিলেটকে ঢাকার পথ ভুলিয়ে দিলেন বুমবুম আফ্রিদি

শান্ত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৭, ২০:৪৮
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭, ২০:৪৮

(প্রিয়.কম) কি দাপুটে শুরুটাই না হয়েছিল সিলেট সিক্সার্সের! ঘরের মাঠে টানা তিন জয়। প্রথম দুই শিকার বিপিএলের দুই চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পরের ম্যাচে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষেও জয় তুলে নিয়ে উড়ছিল নাসির হোসেনের দল। ঘরের মাঠের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে হারলেও লড়াই করেছিল সিলেট। কিন্তু সেই সিলেটই ঢাকায় ফিরে পথ ভুলে হাঁটা শুরু করল অন্য রাস্তায়।  

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে বড্ড অসহায় দেখাল সিলেট সিক্সার্সকে। মেনে নিতে হল আট উইকেটের বড় হার। সিলেটকে পথ ভুলিয়ে দেওয়ার পথে যমদূত হয়ে হাজির হয়েছিলেন ঢাকার পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। বল হাতে মাত্র ১২ রান খরচায় চার উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও তান্ডব চালান ম্যাচসেরা আফ্রিদি। মাত্র ১৭ বলে এক চার পাঁচ ছয়ে খেলেন ৩৭ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। 

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আবু হায়দার রনি, সুনীল নারাইন ও শহীদ আফ্রিদির বোলিং তোপে মাত্র ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় সিলেট। অবশ্য শেষের দিকে আবুল হাসান রাজু অপরাজিত ৩০ রান না করলে ১০০ পেরতো না সিলেটের ইনিংস। জবাবে ৭.৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়েই জয় তুলে নেয় বিপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। জবাবটা ভালই দিল ঢাকা। এবারের বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে নয় উইকেটে হেরেছিল তারা। ফিরতি দেখায় তুলে নিল আট উইকেটের জয়।  

ছোট জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে খুনে শুরু করেন ঢাকার ওপেনার শহীদ আফ্রিদি। অপর পাশে ক্যারিবিয়ান এভিন লুইস থাকলেও তা দেখার সময় কই! সপাটে ব্যাট চালাতে থাকেন পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার। টিম ব্রেসনানের করা প্রথম ওভার থেকেই তুলে নেন ১৪ রান। পরের দুই ওভার একটু থেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে গিয়ে আবারও ঝড় তোলেন আফ্রিদি। 

এবার তার সাথে যোগ দেন এভিন লুইসও। সিলেটের স্পিনার তাইজুলের ওপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় বয়ে যায় এই ওভারে। এই ওভার থেকে ২৬ রান তুলে নেন আফ্রিদি ও লুইস। আফ্রিদি-লুইস দুজনই দুটি করে ছয় হাঁকান। পঞ্চম ওভারে এসে এই ঝড় থামান সিলেটের ইংলিশ পেসার টিম ব্রেসনান। প্রথম দুই বলে ফিরিয়ে দেন আফ্রিদি ও ক্যামেরুন ডেলপোর্টকে।

তবে এতে কোনও প্রভাবই পড়েনি ঢাকার ইনিংসে। লুইসের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। যদিও সাকিবকে তেমন কিছু করতে হয়নি, যা করার লুইস একাই করেছেন। মাত্র ১৮ বলে দুই চার ও পাঁচ ছয়ে ৪৪ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন উইন্ডিস এই ওপেনার। সাকিব ১১ বলে দুই চার ও এক ছয়ে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। 

এরআগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই উল্টো পথের যাত্রী সিলেট সিক্সার্সের ব্যাটসম্যানরা। আবু হায়দার রনি, সুনীল নারাইন ও শহীদ আফ্রিদির বোলিংয়ের সামনে দিশেহারা হয়ে ওঠেন সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। সিলেটের ইনিংসে প্রথম আঘাতটা হানেন ঢাকার পেসার আবু হায়দার রনি। শুরু থেকে দারুণ ছন্দে থাকা সিলেটের ওপেনার উপুল থারাঙ্গাকে এদিন উইকেটে দাঁড়াতেই দেননি রনি।

দলীয় ৮ রানেই থারাঙ্গাকে সাজঘর দেখান তিনি। উইকেট বৃষ্টির শুরু এখান থেকেই। দলীয় ১৩ রানের মাথায় সাব্বির রহমানকে থামান উইন্ডিস স্পিনার সুনীল নারাইন। ১৩ রানে দুই উইকেট হারানো সিলেট আর মাথা সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি। আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছেন সবাই। আর উইকেট প্রাপ্তির উল্লাস করে গেছেন রনি, নারাইন, আফ্রিদিরা। 

সিলেটকে বেশি ভুগিয়েছেন ঢাকার হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা পাকিস্তানির অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় চার উইকেট তুলে নেন আফ্রিদি। নারাইনও ছিলেন বিধ্বংসী ভূমিকায়। চার ওভারে ১০ রান খরচায় তার শিকার তির উইকেট। রনি ২৩ রান খরচায় নিয়েছেন দুই উইকেট। এই তিন বোলারের কাছেই মূলত হেরে গেছে সিলেট। সিলেট সিক্সার্সের স্কোরকার্ডে তাকালে মোবাইল নাম্বার মনে হতে পারে। 

দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন মাত্র চারজন ব্যাটসম্যান। কিন্তু দুই অঙ্কটা বলার মতো নয়। ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকা ১৫ ও অধিনায়ক নাসির হোসেন ১০ রান করেন। শেষের দিকে আবুল হাসান রাজু ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে সিলেট। ৫৩ রানে নয় উইকেট হারানো দলকে ১০০ পেরিয়ে দেয়ার পথে ৪৮ রানের জুটি গড়েন এ দুজন।

রাজু ২৬ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তাইজুল। ২০ বলে এক চারে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি এই স্পিনারও। বাকিরা গেছেন আর ফিরেছেন। যদিও রাজু-তাইজুলদের এই লড়াই কাজে আসেনি। মাঠ ছাড়তে হয়েছে আট উইকেটের হার দিয়ে।