কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অভিজিৎ চৌধুরী। ছবি : প্রিয়.কম। শামীম আহমেদ

‘শিশুদের জন্য ভালো কিছু নির্মাণ করতে চাই’

তাশফিন ত্রপা
ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:২৩
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:২৩

(প্রিয়.কম) চট্টগ্রামের ছেলে অভিজিৎ চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর ছাত্র ছিলেন তিনি। বর্তমানের বাংলাদেশের একমাত্র শিশুতোষ ও পারিবারিক চ্যানেল দুরন্ত টিভির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। গতকাল থেকে এই শিশুতোষ চ্যানেলটি দ্বিতীয় মৌসুমের অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করেছে। সে উপলক্ষে চ্যানেলটির কার্যালয়ে প্রিয়.কম-এর সঙ্গে কথা হয় দুরন্ত টিভির পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরীর।

প্রিয়.কম : শুরু করতে চাই আপনার শৈশব আর শিক্ষাজীবন নিয়ে।

অভিজিৎ চৌধুরী : আমার জন্ম চট্টগ্রামে। শহরটির সদরঘাট, পাঁচলাইশ এবং মেহেদীবাগ এলাকাতেই আমার শৈশব কেটেছে। আইবিএ সম্পন্ন করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে।

প্রিয়.কম : দুরন্ত টিভির পরিচালনার পাশাপাশি অবসর সময় কীভাবে কাটান?

অভিজিৎ চৌধুরী : যেহেতু খেটে খাওয়া মানুষ আমি, তাই বলতে পারেন আমার তেমন কোনো অবসর মেলে না। তারপরও যেটুকু অবসর পাই, সেটুকু সময় আমি আমার পরিবারের সঙ্গেই কাটাতে ভালোবাসি। ক্যারিয়ারের শুরুতে যখন ছোট চাকরি করতাম, মানে এক্সিকিউটিভ পদে ছিলাম, তখন অবসর পেলেই বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতাম, গান শুনতাম, বই পড়তাম। এখন আসলে সেসব চাইলেও আর আগের মতো হয়ে ওঠে না।

প্রিয়.কম : দুরন্ত টিভি প্রারম্ভের কথা যদি বলতেন।

অভিজিৎ চৌধুরী : শুরুর দিকে সবকিছুতেই একটু কষ্ট করতে হয়। আমরা সবসময়ই চেয়েছিলাম এবং এখনো চাই এ দেশের তৈরি কার্টুন প্রচার করতে। বলছি প্রায় বছর দুয়েক আগের কথা। তখন আমরা একটি অ্যানিমেশন কার্টুন তৈরির উদ্যোগ নিই। কিন্তু তখন মাত্র ১১ মিনিটের একটি অ্যানিমেশন কার্টুন নির্মাণ করতে প্রায় ছয় মাস লেগেছিল আমাদের। তারপরও আমরা কিন্তু হাল ছাড়িনি।

‘দুরন্ত’ টিভির পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী। ছবি : প্রিয়.কম/শামীম আহমেদ

প্রিয়.কম : ভবিষ্যতে দুরন্ত টিভিতে বিদেশি ডাবিং কার্টুন কমিয়ে এনে দেশীয় কার্টুন প্রচারের পরিকল্পনা আছে কি?

অভিজিৎ চৌধুরী: হ্যাঁ আছে, আসলে কার্টুন নির্মাণ বেশ কঠিন কাজ। চাইলেই খুব সহজে তা বানানো সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের ইচ্ছা আছে বিদেশ থেকে কার্টুন কেনা কমিয়ে দিয়ে দেশের তৈরি কার্টুন শিশুদের দেখাতে। এ দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে শিশুরা যতটা সহজে খাপ খাইয়ে নেবে, নিশ্চয় বিদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে অতটা সহজে খাপ খাইয়ে নেবে না। আমাদের টেলিভিশনটা যেহেতু ছোটদের, তাই শুরুর দিকে আমাদের লোকসংখ্যাও কম। তবে আমাদের দেশে অনেক কার্টুন এক্সপার্ট রয়েছেন, যারা ভালো অ্যানিমেশন নির্মাণ করেন এবং ভালো গ্রাফিকস ডিজাইনারও আছেন। তাদের নিয়েই আমরা সামনে এগোতে চাই। বাংলাদেশের কেউ যদি ভালো কার্টুন নির্মাতা থাকেন তাহলে তিনিও চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন। আমরা আসলে শিশুদের জন্য ভালো কিছু নির্মাণ করতে চাই। রঙিন ঝকঝকে-তকতকে দৃশ্য না হলে তারাও দেখতে চাইবে না। তাই শিশুদের আকর্ষণীয় করার জন্য নজরকাড়া অনুষ্ঠান তৈরির চেষ্টা করছি।

প্রিয়.কম : বাংলাদেশের তৈরি অ্যানিমেশন এবং এখানকার সংস্কৃতির সংমিশ্রণসমৃদ্ধ কার্টুন নির্মাণ নিয়ে আগামীর ভাবনা কী?

অভিজিৎ চৌধুরী : বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প যে বিশাল ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হয়েছে, কার্টুন নিয়ে এখন সে রকম বড় কোনো সাড়া জাগাতে পারিনি আমরা। ইন্ডিয়া, হাঙ্গেরি কিংবা কোরিয়ার মতো স্থানে মোটামুটিভাবে জনপ্রিয় কার্টুন শিল্প গড়ে উঠেছে। আমরাও চাই বাংলাদেশের তৈরি অ্যানিমেশন এবং এখানকার সংস্কৃতির সংমিশ্রণসমৃদ্ধ কার্টুন সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করুক। তবে আমার বিশ্বাস আমরাও একদিন কার্টুনের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে যাব। শুধু দেশের মানুষের জন্যই আমরা কার্টুন বানাব, ব্যাপারটা তা নয়। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের দেশের তৈরি কার্টুন দেখে অন্যান্য দেশের মানুষও আকৃষ্ট হোক। আমরা আমাদের সেই জায়গাতেই নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

দ্বিতীয় মৌসুম উপলক্ষে ‘দুরন্ত’ টিভির কার্যালয়ে পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী। ছবি : প্রিয়.কম, শামীম আহমেদ 

প্রিয়.কম : বর্তমানে এ বিষয়ে কী ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন আপনারা?

অভিজিৎ চৌধুরী : ইতোমধ্যে ‘দুরন্ত’ টিভির ইন-হাউসে দেশীয় সংস্কৃতির ধাঁচে কার্টুন নির্মাণ করার কাজ শুরু করে দিয়েছি। সময় কিংবা অর্থ ব্যয় হলেও আমরা দেশের তৈরি বাংলা কার্টুনের প্রতি প্রাধান্য দিচ্ছি। আমাদের ইন-হাউসে বেশ ক'জন কার্টুন নির্মাতা, অ্যানিমেশন নির্মাণকারী, ভালো গ্রাফিক ডিজাইনার এবং বিভিন্ন এক্সপার্টও রয়েছেন।

প্রিয়.কম : দ্বিতীয় মৌসুমের অনুষ্ঠানে ‘দুরন্ত’ নতুন কী অনুষ্ঠান রেখেছে?

অভিজিৎ চৌধুরী : ‘দুরন্ত’ টিভিতে শিশুদের প্রাধান্যটাই বেশি, তাই অনুষ্ঠানের সময়সূচিটাও আমরা শিশুদের দেখার সময় উপযোগী করেই প্রচার করি। এই মৌসুমে কিছু নতুন অনুষ্ঠান ও কার্টুন সিরিজ চলবে এবং সেই সাথে ছয়টি নতুন অনুষ্ঠান এবং পাঁচটি নতুন কার্টুন যুক্ত হবে। ছয়টি নতুন অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-'নাচের ইশকুল', 'স্বপ্ন আঁকার দল', 'সোনার কাঠি রুপার কাঠি', 'দুষ্টু মিষ্টি', 'ব তে বন্ধু' এবং 'কাবিল কোহকাফী'। আর পাঁচটি নতুন কার্টুনের মধ্যে রয়েছে 'আজি বু', 'এইচ টি ডি টি', 'ক্রাফটি কিডস ক্লাব', 'ট্রি ফু টম', 'দ্য হাপেটস', 'ক্লে কিডস' এবং 'হেয়ারপোর্ট'।

প্রিয় বিনোদন/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ/আজাদ চৌধুরী