কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি: নূর

গর্ভবতী অবস্থায় পুনরায় গর্ভধারণ!

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:২১
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:২১

(প্রিয়.কম) ইতোমধ্যেই গর্ভবতী ছিলেন আমেরিকান এক নারী। এরপর আবারো তিনি গর্ভধারণ করেন। ফলাফল হিসেবে এমন দুই শিশু জন্ম নেয় তার গর্ভ থেকে যাদের পিতামাতা একেবারেই আলাদা!

২০১৬ সালের এপ্রিলে ক্যালিফোর্নিয়ার জেসিকা অ্যালেন এক চাইনিজ দম্পতির জন্য সারোগেট মাদার হতে সম্মতি দেন ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে। ক্যালিফোর্নিয়া হলো আমেরিকার এমন এক রাজ্য যেখানে অর্থের বিনিময়ে সারোগেট মাদার পেতে পারেন দম্পতিরা। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) এর মাধ্যমে সেই চাইনিজ দম্পতির নিষিক্ত ভ্রূণ তার গর্ভে স্থাপন করা হয়।

গর্ভধারণের ষষ্ঠ সপ্তাহে আলট্রাসাউন্ডের পর দেখা যায় তার গর্ভে রয়েছে এক জোড়া শিশু। ফলে তাকে আরো ৫ হাজার ডলার দেয় সেই চাইনিজ দম্পতি কারণ তারা ধরে নেন তাদের সেই নিষিক্ত ভ্রূণ থেকেই যমজ শিশু গর্ভে ধারণ করছেন জেসিকা। সেই বছরেই ডিসেম্বর মাসে জেসিকা এক জোড়া সন্তানের জন্ম দেন। এক মাস পর সেই চাইনিজ দম্পতি শিশু দুটির একটি ছবি পাঠায়, সেই সাথে একটি বার্তা ছিল, “এই দুজন দেখতে একরকম নয়, তাই না? আপনার কী মনে হয়, কেন তারা দেখতে আলাদা?”

এবিসি নিউজকে জেসিকা বলেন, “আমি লক্ষ্য করলাম একজনের ত্বক আরেকজনের চাইতে বেশ ফর্সা। সুতরাং তারা অবশ্যই আইডেন্টিকাল টুইন ছিল না।” এরপর ডিএনএ টেস্ট করা হয় সংশয় দূর করার জন্য। দেখা যায়, একটি শিশু নিঃসন্দেহে সেই চাইনিজ দম্পতির শিশু। কিন্তু অন্যটি হলো জেসিকার নিজের শিশু। হতবাক হয়ে পড়েন তারা। জেসিকা বলেন, “আমি ভাবছিলাম এটা কী করে সম্ভব?”

ইতোমধ্যেই তার গর্ভে সেই চাইনিজ দম্পতির শিশু ছিল, এরপর আবার তিনি নিজে কী করে গর্ভবতী হয়ে পড়েন? অদ্ভুত শোনালেও এই ব্যাপারটির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। একে বলা হয় “সুপারফিটেশন”। এটি খুবই দুর্লভ কারণ বেশিরভাগ সময়ে একজন নারী গর্ভবতী হয়ে পড়ার পর তার শরীর এমন সব হরমোন নিঃসরণ করে যাতে আর ওভুলেশন হয় না অর্থাৎ তার আবার গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু এক্ষেত্রে জেসিকার গর্ভে একটি ভ্রূণ থাকার পরেও তার ওভুলেশন হচ্ছিল। ফলে এমন একটি ডিম্ব তার শরীরে উপস্থিত ছিল যা যৌন মিলনের ফলে নিষিক্ত হয় এবং তিনি আরো একটি ভ্রূণ গর্ভে ধারণ করেন। সুপারফিটেশন মানুষের ক্ষেত্রে খুবই দুর্লভ হবার কারণে এ ব্যাপারে গবেষক এবং ডাক্তাররা খুবই কম জানেন।

তবে ভালো খবর হলো দুইটি শিশুই এখন সুস্থ আছে। আইনি এবং আর্থিক কিছু জটিলতার পর জেসিকা এবং তার সঙ্গী জ্যাসপার তাদের পুত্র শিশুর দায়িত্ব সেই চাইনিজ দম্পতির থেকে বুঝে নেন এবং তার নাম রাখেন মালাকি।

সূত্র: IFLScience