ডায়েট পানীয় পানেও আপনার ওজন বাড়তে পারে এবং শরীরের ক্ষতি হতে পারে!
৯ টি খারাপ অভ্যাস যা আপনি স্বাস্থ্যকর হিসাবে জানেন!
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:৪২
(প্রিয়.কম) টিভি বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ করে থাকি যা কিনা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অথচ আমরা সেই ব্যাপারে একেবারেই সচেতন নয়। কারণ আমরা সবসময় জেনে আসছে এই অভ্যাসগুলো স্বাভাবিক এবং এই কাজগুলোর কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই!
আজকের এই ফিচার থেকে জেনে নিন এমন কিছু প্রাত্যহিক দিনের অভ্যাস সম্পর্কে যা কিনা আপনার শারীরিক ক্ষতি করে চলেছে আপনার অজান্তেই।
১/ পানি দিয়ে কুলি করা
আমরা সকলেই টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ভালোমতো মেজে এরপর পানি দিয়ে কুলি করে ফেলি। এই অভ্যাসটাকেই আমরা সাধারণ একটি অভ্যাস বলে জানি সেই ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি কিছু দাঁতের ডাক্তার এই অভ্যাসের সমালোচনা করেছেন।
আপনি যখন টুথপেস্ট ব্যাবহার করে দাঁত মাজছেন তখন আপনার দাঁতের উপরের স্তরে ফ্লোরিনের একটি নিরাপত্তামূলক আবরণের সৃষ্টি হয় যা পানি দিয়ে কুলি করলে চলে যায়। তাই, দাঁত মাজার পর দাঁতে ভালো প্রভাবের জন্য এলকোহল-ফ্রি সল্যুশন দিয়ে কুলি করা উচিৎ।
২/ ট্রেডমিলে ওয়ার্কআউট করা
বাড়তি ওজন কমানোর জন্য ট্রেডমিল খুবই জনপ্রিয় একটি যন্ত্র। তবে অনেক লম্বা সময়ের জন্য ট্রেডমিল ব্যবহার আপনার হাড়ের জয়েন্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
তাই এই সমস্যা এড়ানোর জন্য আপনি আপনার ট্রেডমিল ওয়ার্কআউটে মাসল-স্ট্রেচনিং এক্সারসাইজগুলো যোগ করতে পারেন। এতে করে শুধু যে আপনার ওজন কমবে তাই কিন্তু নয়, সাথে আপনার মাংশপেশীও সবল থাকবে।
৩/ দিবা নিদ্রা
এই দিবা নিদ্রাকে আমরা অনেকে আদর করে ভাতঘুম বলে থাকি। কিন্তু এই অতি আরামদায়ক মধ্যাহ্নকালীন নিদ্রা আপনার জন্য ভালো নয়। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এই অভ্যাস হৃদরোগ তৈরি করে থাকে। একইসাথে, অনেক লম্বা সময় ধরে এই অভ্যাস বজায় রাখলে স্মৃতিগত এবং ব্রেইনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪/ অ্যান্টিস্যাপটিক এবং অ্যান্টিব্যক্টেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা
বিজ্ঞাপন আমাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করে যে, শুধুমাত্র অ্যান্টিস্যাপটিক এবং অ্যান্টিব্যক্টেরিয়াল সাবানই পারে আপনার হাতের সকল জীবাণু মেরে ফেলে পারে। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, এমন সাবান খুব বেশী পরিমাণে ব্যবহারে আপনার হাতে নতুন ধরণের জীবানুর সৃষ্টি করে থাকে। এমনকি, যেকোন সাধারণ সাবানও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবানের মতোই কাজ করে থাকে।
৫/ ভিটামিন ওষুধ সেবন করা
আমরা সকলেই যে ব্যাপারটি জেনে থাকি সেটা হল, ভিমাটিমনস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং প্রয়োজনীয়, যার অনুপস্থিতিতে শরীরে নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আমরা কিন্তু এইটা জানিনা যে, অনেক সময় এই ভিটামিন গ্রহণও শরীরে জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা থেকে পেয়েছেন যে, যারা ভিটামিনস সেবন করেন না তাদের থেকে যারা ভিটামিনস সেবন করেন এবং যাদের কোন ধরণের বদঅভ্যাস রয়েছে তাদের সংখ্যা প্রায় ৪৬% বেশী। যে কারণে আপনার সবসময় উচিৎ ডাক্তারের সাথে কথা বলে এরপর ভিটামিনস সেবন করা।
৬/ ডায়েট ড্রিংক্স পান করা
ডায়েট পানীয় তৈরি প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করে যে, এই সকল পানীয় শরীরের জন্য ভালো কারণ এতে রয়েছে খুব কম ক্যালরি যা শরীরের জন্য কম ক্ষতিকারক এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখার ক্ষেত্রেও কোন অসুবিধা তৈরি করে না।
কিন্তু ভয়াবহ তথ্য জানান গবেষকেরা। তারা জানাচ্ছেন দিকে এক ক্যান ডায়েট পানীয় পান করলেও সেটা আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, রক্তচাপ বাড়ায় এবং ওজন বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।
৭/ ওজন কমানোর প্রবণতা
কিছু গবেষক বলছেন যে, চিকন হওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা ভালো নয় যতোটা আমরা মনে করে থাকি। অনেক বেশী খাবার খান কিন্তু সেই তুলনায় খুব একটা ওজন বৃদ্ধি হয় না যাদের, তাদের ক্ষেত্রে সম্ভবনা অনেক বেশী থাকে যে খাবারের চর্বি তাদের হার্ট এবং লিভারের আশেপাশে গিয়ে জমা হচ্ছে, যা থেকে তাদের অনেক গুরুতর রোগ তৈরি হতে পারে।
শীতকালে একজন চিকন মানুষের ঠাণ্ডা লাগার প্রবনতা অনেক বেশী থাকে। এরই সাথে জেনে রাখা ভালো যে, একশতরও বেশী প্রজেক্ট রিসার্চের রেজাল্ট থেকে পাওয়া গিয়েছে যে, একজন চিকন মানুষ এবং একজন অরিতিক্ত ওজনের মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি একই সমান।
৮/ প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করা
নিজের ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করা খুবই ভালো একটি অভ্যাস। কিন্তু এই একই কথা ডিটার্জেন্ট এবং ক্লিনিং কেমিকেলের ক্ষেত্রে যায় না।
ঘর পরিষ্কার করার এই সকল জিনিসে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান ব্যাবহার করা হয় যা চোখের সমস্যা, মাথাব্যথা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৯/ অনেক বেশী পরিমাণে পানি খাওয়া
আমরা প্রত্যেকেই নিশ্চয় এই কথাটি জানি যে প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস করে পানি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, আমাদের প্রতিদিনের শারীরিক কার্যকলাপের জন্য পানি পান করাটা অপরিহার্য এবং প্রয়োজনীয়- যদিনা আমরা অতিরিক্ত পানি পান করে থাকি।
কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত বেশী পরিমাণে পানি পান করলে কিডনির সমস্যা এবং ব্রেইন ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরই সাথে অতিরিক্ত পানি পানের ফলে আপনার শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটসের পরিমাণ কমে যায়, যা থেকে খুব গুরুতর অবস্থা তৈরি হতে পারে যার নাম হাইপোন্যাট্রেমিয়া।
সূত্র: Bright Side.
সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী