কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এখনও অনেকেই ত্রাণ পাননি বলেও অভিযোগও রয়েছে। ছবি: প্রিয়.কম

মানিকগঞ্জে বন্যার্তদের দুর্বিষহ জীবনযাপন

মো. সুমন হোসেন
কন্ট্রিবিউটর, মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০১৭, ২০:৪৫
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০১৭, ২০:৪৫

(প্রিয়.কম) যমুনায় পানি কমলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ২২ আগস্ট মঙ্গলবারও যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।

চরের বেশির ভাগ বাড়ি-ঘরে পানি থাকায় তারা অনেক কষ্টে করে জীবনযাপন করছেন। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি খাবার পানির সংকট রয়েছে। টয়লেট ডুবে যাওয়ায় পয়ঃনিষ্কাশনে অসুবিধা হচ্ছে। চোর ডাকাতের ভয়ে রাত জেগে তাদের গবাদি পশু পাহারা দিতে হচ্ছে। এখনও অনেকেই ত্রাণ পাননি বলেও অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে বন্যায় সড়ক ভেঙে যাওয়ায় জেলার সাথে হরিরামপুর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হরিরামপুর উপজেলায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে গত কয়েকদিনে নদী ভাঙনে প্রায় ৩০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ত্রাণসাগ্রী অপ্রতুল হওয়ায় বন্যায় বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্তরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

সোমবার শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়ার চর এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সবার-বাড়ি ঘরেই পানি উঠেছে। বন্যাকবলিত এ এলাকার লোকজন ঘরে তালা দিয়ে গরু-ছাগল নিয়ে অশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। আবার কেউ কেউ পানির ওপর মাচা বানিয়ে শিশুসহ পরিবারের সকলকে নিয়ে বাড়িতেই থাকছেন। পোকা-মাকরের ভয়ে সারারাত কুপিবাতি জ্বালিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এভাবে পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

চরশিবালয়ের কমলা বেগম বলেন, বন্যার শুরু থেকেই আমরা পানিবন্দী অবস্থায় আছি। এ পর্যন্ত কোনো ত্রাণসামগ্রী পাইনি। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি। রাতে পানি বেশি থাকায় চোর ডাকাতের ভয়ে ভালোভাবে ঘুমাতেও পারি না। একদিকে বন্যার পানি, অন্যদিকে গবাদি পশু চুরির ভয়। এই ভাবে কোনোরকমে বেঁচে আছি।

একই এলাকার ফুলবানু বলেন, ঘরের মধ্যে হাঁটু পানি, আশ্রয়কেন্দ্রেও যাইনি। পানির উপর মাচা তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে থাকছেন। এ পর্যন্ত সরাকরি-বেসরকারি কোনো ত্রাণই পাননি। সন্তানদের নিয়ে কোনো বেলা খেয়ে, কোন বেলা না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

শিবালয় ৩নং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী খুবই কম। অপ্রতুল ত্রাণ দিতে গিয়ে আমাদের নানা ধরনের সমস্যার সন্মুখীন হতে হচ্ছে। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত