কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সফল ব্যক্তিরা করে এমন ১০০টি বিষয়: সফল জীবনযাপনের ছোট্ট অনুশীলন’ বইটি হাতে অনুবাদক বুশরা আমিন তুবা। ছবি: নূর, প্রিয়.কম।

সফল ব্যক্তিদের ১০০ জীবনচর্চা (অনুশীলন ৯৯): 'পৃথিবীতে নিজের চিহ্ন রেখে যান'

বুশরা আমিন তুবা
ফিচার লেখক, প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:১৪
আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:১৪

(প্রিয়.কম) প্রিয় পাঠক, আপনাদের জন্য রয়েছে আমাদের এ নতুন আয়োজন। এখানে 'দ্য সিল্ক রোড পার্টনারশিপ' এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা নাইজেল কাম্বারল্যান্ড লিখিত একটি বইয়ের সাথে আপনাদের পরিচয় করানো হবে। বইটির শিরোনাম, 'হান্ড্রেড থিংস সাকসেসফুল পিপল ডু: লিটল এক্সারসাইজেস ফর সাকসেসফুল লিভিং’। এবং আমরা বইটি অনুবাদ করছি "সফল ব্যক্তিদের ১০০ জীবনচর্চা" শিরোনামে। সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে প্রতিদিন এই বই থেকে একটি করে বিষয় আলোচনা করা হবে। আজকের আয়োজনে জেনে নিন সফল ব্যক্তিদের করা ৯৯ নম্বর বিষয়টি সম্পর্কে।

অনুশীলন ৯৯: 'পৃথিবীতে নিজের চিহ্ন রেখে যান' 

আপনি কীভাবে নিজের স্মৃতি রেখে যেতে চান? মনে করুন, আপনার মৃত্যুর দিন কী হচ্ছে তা শুনতে পাবেন আপনি। তখন অপরের মুখে আপনি নিজের ব্যাপারে কী শুনতে চান? আপনার বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ি কত সুন্দর ছিল নিশ্চয়ই মানুষ সেটা মনে রাখবে না। যে ব্যাপারটি নিয়ে মানুষ কথা বলবে সেটি হলো আপনার চরিত্র, ব্যবহার এবং মানসিকতা। আপনি কেমন ব্যবহার করতেন অপরের সঙ্গে সেটি নিয়েও বেশ কথা উঠবে। আপনার ভেতর কতোটুকু দয়া, সম্মান ও ভালোবাসা ছিলো মানুষ তা নিয়েও আলোচনা করবে। শেকসপিয়ার সততাকেই সবচেয়ে বড় সম্পদ হিসেবে গণ্য করেছেন। অপরদিকে, বিল গ্রাহাম বলেছেন মৃত্যুর পর পরিবারের জন্য জাগতিক কোন সম্পদ রেখে যাই না আমরা। যা রেখে যাই তা হলো চরিত্র এবং বিশ্বাস।

এ ব্যাপারে একটু ভাবুন তো। যারা ইহলোক ত্যাগ করে চলে গিয়েছেন তাদের সম্পর্কে আপনার কেমন ধারণা রয়েছে এখন? আমি আমার দাদা, দাদী এবং শাশুড়ির কথা মনে করি। দাদা আমাকে অফুরন্ত সময় দান করেছেন, দাদি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সাহায্য করেছেন এবং শাশুড়ি শিখিয়েছেন একটি পরিবারে কিভাবে সর্বদা মিলেমিশে থাকা যায়।

কিন্তু উত্তরাধিকার মানে শুধু এই না যে, আপনি মারা যাবার পর যা ছেড়ে যান। জীবনের সকল বাঁকেই আপনি কোথাও না কোথাও নিজের অস্তিত্ব ছেড়ে আসেন। প্রতিবার যখন আপনি কর্মক্ষেত্র, বিদ্যালয়, বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করেন আপনি নিজের কিছু না কিছু ছেড়ে আসেন। জীবন বহতা নদীর মতন এবং এই জোয়ার-ভাটা চলতেই থাকে, থাকবে।

৩৬০ ডিগ্রী ফিডব্যাক সেশন

বিভিন্ন মানুষকে জিজ্ঞেস করুন। যেমন- পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীকে।

- আমি হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেলে তোমরা আমাকে কীভাবে মনে রাখবে?

- আমার নাম উচ্চারিত হলে তোমাদের মনে প্রথমে কী আসবে?

- ইতিবাচক ও নেতিবাচক কোন ধারণাগুলো মনে হবে?

- আপনার ওপর আমি কেমন প্রভাব ফেলেছি?

শান্তভাবে শুনুন, হাসুন এবং তাদের ধন্যবাদ দিন সৎ উত্তরের জন্য। তারা যদি আপনাকে এমন কিছু বলে যেগুলো শুনে আপনি বেশ অপ্রস্তুত বোধ করছেন, তবুও প্রতিক্রিয়া দেখানোর কোন দরকার নেই, শান্ত থাকুন।

সচেতনভাবে উত্তরাধিকার সূত্র তৈরি করুন

আপনি যে ফিডব্যাক পেয়েছেন তার ওপর ভিত্তি করে এবার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা শুরু করুন। আপনি হয়তো এতে অবাক হবেন এবং নিখুঁত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়া থেকে আপনি বেশ দূরে অবস্থান করছেন। নিজেকে প্রশ্ন করুন যে কর্মক্ষেত্রে, পরিবারে এবং বাইরের জগতে আপনি নিজের কেমন প্রভাব ফেলতে চান?  

আজ পর্যন্ত আপনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে যে প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং যা করতে চান ভবিষ্যতে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করুন। এতে করে আপনি হয়তো একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবেন যে আপনার কী করা উচিৎ এবং কী করছেন? নিজের ব্যক্তিত্ব, অভ্যাস ও আচরণের দিকে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিন। 

আপনি যদি অনুভব করতে পারেন যে জীবনে খুব একটা পরিবর্তন আনেননি, মনঃক্ষুণ্ণ হবার প্রয়োজন নেই। ভুলগুলো মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করুন। দরকার হলে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। মানুষকে ভালোবাসুন, মূল্য দিন এবং তাদের কথায় মনোনিবেশ করুন। মায়া অ্যাঞ্জেলোর একটি কথা বেশ গভীরভাবে মনে পড়ে এক্ষেত্রে, 'আমি জেনেছি যে মানুষ ভুলে যাবে আপনি কি বলেছেন, কি করেছেন। কিন্তু এটা আজীবন মনে রাখবে যে আপনি তাদের কেমন অনুভব করিয়েছেন' 

প্রিয় লাইফ/ কে এন দেয়া