কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলি ও তার ছেলে আয়মান সোয়াদ। সংগৃহীত ছবি

‘সন্তানের গলায় পিতার ছুরি’ ধরার তথ্য নিশ্চিত করলো রাবি শিক্ষকের ছেলে

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:৩২
আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:৩২

আরিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

(প্রিয় ক্যাম্পাস) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদ নিজের একমাত্র সন্তানের গলাই ছুরি ধরেছিলেন। তার সাবেক স্ত্রী আকতার জাহানের সুইসাইড নোটে এমন দাবির পর তাদের ছেলে সোয়াদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আকতার জাহানের আত্মহত্যার পর থেকেই সুইসাইড নোট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা হতে দেখা গেছে। অবশেষে আয়মান সোয়াদ ফেসবুকে একটি পোস্টে দিয়ে তার বাবা যেভাবে ছুরি ধরেছিলেন, সেই ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।
অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া সোয়াদ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘অনেকদিন ধরেই আমার কাছে ওই ‘গলায় ছুড়ি’ ধরার ঘটনাটা জানতে চাওয়া হচ্ছে। আজকেই বলেই দেই, কি ঘটেছিল ওই দিন।

আম্মা আর আমি বাইরে যেতে চেয়েছিলাম আমার এক বান্ধবীর বাসায় (বান্ধবীর নাম মেনশন করলাম না)। সারাদিন প্ল্যানিং করার পর আমি আব্বার কাছে অনুমতি চাইতে গিয়েছিলাম। অনুমতি চাওয়ার সময় আব্বা বলে ‘তোমার আম্মাকে বলো ওর মত চলে যেতে। আমি তোমাকে দিয়ে আসবো’।

আমি বললাম ‘আজব তো। আমি আর মা এই জিনিস প্ল্যান করসি। তুমি কেন ইন্টারফেয়ার করতেসো?’ আব্বা বলল ‘বাপ হিসেবে আমার এই অধিকার আছে’। আমি বললাম ‘কিন্তু আম্মার সাথে প্ল্যান নষ্ট করার অধিকারও তোমার নাই’। আব্বা বলে ‘মেইন থিং ইজ... তোমাকে ওই মহিলার সাথে যেতে দিব না। গেলে আমার সাথে যাবা, নাহলে নাই’।

আমি বলি ‘কি এমন করসে যে এত ক্ষতিকর মনে করো আম্মাকে? হ্যা?’ আব্বা কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যায়ে। পরে বাধ্য হয়ে আম্মাকে ফোন দিয়ে বলি যে আমি যেতে পারব না আজকে। মা বলে ‘আমি বুঝছি কি হয়েছে। চিন্তা করিস না বাবা। আর কয়েকটা দিন’। পরে সন্ধ্যা বেলায় আব্বাকে বলি ‘প্ল্যানটা নষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ’ তখনি আব্বা বলে উঠে ‘তুই কি ঝগড়া লাগাইতে চাস? তোর আম্মার মত হয়েছিস’।

আমি বলি ‘আমার আম্মার নামে এইসব কথা বলবা না। খবরদার!’ আব্বা বলে ‘তোর মায়ের সাথে কথা বন্ধ কর, এই কথাগুলাও বন্ধ হয়ে যাবে।’ আমি বলি ‘বন্ধ করবো না!’ আব্বা তখনি রান্নাঘরে গিয়ে একটা বড় চাকু নিয়ে এসে আমার গলায় ধরে বলে ‘কি বললি? সবশেষে সোয়াদ লিখেছে শুনতে পাইনি’ বললাম অল্প শুরে ‘বন্ধ করবো না। মেরে ফেলতে চাইলে মারো। আম্মাকে তো আমার সামনে মারার চেষ্টা করেছো। সিউরলি এটাও পারবে।’ আব্বা চাকুটা ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিলো। ‘কিছু না বলে চলে যায়ে ঘরে’

প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে আকতার জাহানকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার কক্ষে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করে পুলিশ। এই সূত্রে পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর থানায় আত্মহত্যায় পরোচনার মামলা করেন জলির ছোট ভাই কামরুল হাসান। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় আকতার জাহানের সাবেক স্বামীকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে।

প্রিয় সংবাদ/জাইজ/এআই