ছবি সংগৃহীত
রিজার্ভ চুরি: তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাটর্নি নিয়োগ
আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬, ০৭:৩৭
(প্রিয়.কম) নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বা ফেড থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বির্জাভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরির ঘটনায় এবার তদন্তে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র অ্যাটর্নির কার্যালয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে সাদার্ন ডিস্ট্রিক অব নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি প্রিত ভারারা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে ভারারার কার্যালয়ের কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাইবার চুরির ঘটনা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই ও সরকাররি সংস্থাগুলো নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগের মধ্যে সরকারি কৌসুঁলির মাধ্যমে তদন্ত শুরুর খবর এলো।
দেশটির প্রশাসন এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোকে জাল অর্থ লেনদেনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনঃনিরীক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির ঘটনাকে সতর্কতার কারণের উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছে তারা।
আর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোকে সাইবার হামলার চিহ্ন ও এর পেছনে প্রযুক্তিগত খুঁত খুঁজে বের করার পরামর্শ দেয় এফবিআই।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্ত শুরু করে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সুইফটের মাধ্যমে ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে ফেডে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে চুরি করে ফিলিপিন্সে সরিয়ে নেওয়া হয়। আলোচিত এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে সরে যেতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নড়চড় শুরু হয়।
এর মধ্যে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ও ইকুয়েডরের অর্থ চুরির ঘটনা প্রকাশের প্রেক্ষাপটে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের বৈশ্বিক সংগঠন সুইফট ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দেয়।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কমিটির চিঠি যায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে এবং এক চিঠিতে গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে সব তথ্য দিতে বলা হয়।
এদিকে, ভুয়া নির্দেশে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে রিজার্ভের অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে নিউ ইয়র্ক ফেডের দায়ও দেখছে বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকটির দাবি, তাদের নিরাপত্তায় কোনো খাদ নেই।
গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।
শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে।
এই ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশ সরকার যে কমিটি করেছে; তারা বলছে, এই ঘটনায় সুইফটেরও দায় আছে। আর এই চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ থাকলেও থাকতে পারে।