কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি: বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন প্রকাশ

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১০:৫২
আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১০:৫২

ফাইল ছবি

(প্রিয়.কম) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আগামী বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২৪ সেপ্টেম্বর আমি দেশের বাইরে যাব। তার আগেই ২২ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।’

তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ৩০ মে হাতে পাওয়ার পর তা ‘পড়ে দেখে’ প্রকাশ করার কথা জানিয়েছিলেন মুহিত। এরপর ওই প্রতিবেদন প্রকাশে আরও বেশ কয়েক দফা সময় দিলেও তিনি কথা রাখতে পারেননি।

তিন সপ্তাহের সফরে ২৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন অর্থমন্ত্রী। এই সফরে তিনি নেদারল্যান্ডস ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন। সফর শেষে ১২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে।

বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল।

ওই সময়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করা হয়। ১৫ মার্চ সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কীভাবে, কার বরাবরে ভুয়া পেমেন্ট ইন্সট্রাকশন পাঠানো হয়েছিল, অবৈধ পরিশোধ ঠেকাতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল কি না, রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রায় এক মাস গোপন রাখা যৌক্তিক ছিল কি না, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবহেলা ছিল কি না এবং অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা, গৃহীত কার্যক্রমের পর্যাপ্ততা ও পুনরাবৃত্তি রোধে গৃহীত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমিটিকে।

বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গত ২০ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেয় ফরাসউদ্দিনের কমিটি। এরপর ৩০ মে দেওয়া হয় পুরো প্রতিবেদন।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর তদন্ত কমিটির প্রধান ফরাসউদ্দিন বলেছিলেন, রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও সম্পৃক্ততা নেই বলে আগে তারা ধারণা করলেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ওই অবস্থান থেকে ‘সামান্য’ সরে এসেছেন।

ভুয়া সুইফট মেসেজ পাঠিয়ে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সাইবার চুরির ওই ঘটনায় কারা কারা জড়িত, সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি কী কী সুপারিশ করেছে- সে তথ্য প্রকাশ করেননি তদন্ত কমিটির প্রধান বা অর্থমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফরাসউদ্দিন শুধু বলেন, ‘সুইফটেরও দায় দায়িত্ব আছে, সম্পূর্ণ দায় বা মূল দায় তাদের কি না, সেই বিশ্লেষণও প্রতিবেদনে আছে। সুফইট কখনো দায় এড়াতে পারে না। তবে সুইফটের সাহায্য নিয়েই আমাদের ভবিষ্যতের প্রবলেমটা সলভ করতে হবে।’

চুরি যাওয়া টাকার কতটা আদায় করা সম্ভব- তার একটা চিত্রও প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘বেশ ভালো একটা আশাব্যাঞ্জক চিত্র আমরা দিয়েছি।’

হাকিংয়ের এই ঘটনায় সুইফটের বিরুদ্ধে মামলার কথা বললেও পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান ব্যাংকটির মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কয়েক দফা সময় দেওয়ার পরও ওই প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশিত না হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিষয়ক সংসদীয় কমিটিও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেখতে চায়।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটির তদন্তের মধ‌্যে কিম অং নামের এক ক্যাসিনো ব্যবসায়ী দেড় কোটি ডলার ফিলিপিন্স সরকারের হাতে ফেরত দেন।

প্রিয় সংবাদ/কেএ/টিআর