কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

আজ পর্যন্ত বিশ্বের সবচাইতে লম্বা মানুষ ‘ইলিনয় দৈত্য’!

আফসানা সুমী
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ১০:১২
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৬, ১০:১২

ফটো সোর্স: www.pinterest.com

(প্রিয়.কম) নিজেদের উচ্চতা নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না এমন বোধ হয় আমরা কেউ নেই। কেউ ভাবি, যদি আরেকটু লম্বা হতাম! কেউ ভাবি, লম্বা হয়ে দেখতে বেখাপ্পা হয়ে গেলাম কিনা! বিয়ের সময়ও উচ্চতা মিলিয়ে পাত্র-পাত্রী খোঁজা হয়। কারো উচ্চতা কম হলে আমরা অখুশী হই। কিন্তু লম্বা হওয়া যে একটি অসুস্থতাও হতে পারে তা হয়তো কেউ জানিই না।

হ্যাঁ, দুনিয়ার সবচেয়ে লম্বা মানুষটি কিন্তু অসুস্থতার কারণেই এত লম্বা। নাম তার রবার্ট পারসিন ওয়াডলো। যাকে বলা হয় ‘ইলিনয় দৈত্য’ ।তার উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ১১.১ ইঞ্চি এবং ওজন ছিল ২২০ কেজি। অস্বাভাবিক ভাবে লম্বা হচ্ছিলেন তিনি ছোটবেলা থেকেই। এর পেছনে কারণ ছিল তার বৃহৎ পিটুইটারি গ্ল্যানড, যার মধ্য থেকে ক্রমাগত শরীরবর্ধক হরমোন বের হয়ে তাকে লম্বা করে চলেছিল। কোনভাবেই এই নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। এমনকি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বেড়ে চলছিলেন।এই অস্বাভাবিক উচ্চতা নিয়ে ভীষণ কঠিন জীবন যাপন করেছেন তিনি। 

জন্ম:

ওয়াডলো জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার এল্টোন শহরে। জন্মকালীন তার ওজন ছিল ৩.৮ কেজি। ১৩ বছর বয়সেই তার উচ্চতা ছিল ৭ ফুট ৪ ইঞ্চি। ১৮ বছর বয়সে তার উচ্চতা দাঁড়ায় ৮ ফুট ৪ ইঞ্চিতে আর ওজন ১৭৭ কেজি। 

জীবনসংগ্রাম:

ওয়াডলোর জুতার সাইজ ছিল ৩৭ । এই সাইজের জুতা বানাতে সেই সময়েই খরচ হত ১০০ ডলার। তাই তিনি একটি আন্তর্জাতিক জুতা বানানোর কোম্পানির সাথে চুক্তি করেন। তারা তার জুতা বানিয়ে দিতেন । বিনিময়ে তিনি সেই কোম্পানির হয়ে প্রচারণা চালাতেন। তার জন্য প্রতিটি জিনিসই ভিন্নভাবে তৈরি করতে হত। ছোটবেলায় স্কুলের বেঞ্চে তিনি বসতে পারতেন না। স্কুল বাসে তার জায়গা হত না। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া ছিল তার জন্য ভীষন ভয়ংকর। সবসময় কুঁজো হয়ে বস্তে হত তাকে। বাসে, প্লেনে পা রাখার জন্য যতটুকু জায়গা থাকত তা ছিল তার জন্য খুবই কম। পুরো জার্নি তাকে বাঁকা হয়ে অনেক কষ্টে বসে থাকতে। শারীরিক অনেক সমস্যা তো ছিলই।

গিনেস রেকর্ডঃ 

১৯৩৭ সালে তিনি পূর্বের সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তির রেকর্ড ভাঙেন এবং গিনেস বুকে নিজের স্থান করে নেন।

মৃত্যু:

১৯৪০ সালের ৪ জুলাই তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পরেন। তার পায়ের ব্রেসগুলির সমস্যার কারণে অনেক ক্ষতি হয় এবং ইনফেকশন ছড়িয়ে পরে। ডাক্তাররা নতুন রক্ত দিয়ে, অপারেশন করে এই সমস্যা সারানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অসফল হন। অবশেষে ১৯৪০ সালের ১৫ জুলাই মারা যান পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা এই মানুষটি।

১৯৮৪ সালে তার জন্ম শহরে তার স্মরনে একটি ব্রোঞ্জ মূর্তি বানানো হয়।

 সমস্যা, প্রতিকূলতা সব মানষের জীবনেই থাকে। কিন্তু তার সাথে লড়াই করে টিকে থাকা খুবই কঠিন। প্রচন্ড সংগ্রামী, ধৈর্য্যশীল মানুষ রবার্ট পারসিং ওয়াডলো তাই আমাদের সকলের আদর্শ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি লড়াই করে গেছেন। কখনো হাল ছাড়েন নি।

লিখেছেন- 

আফসানা সুমী

ফিচার রাইটার,

প্রিয় লাইফ